কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
পবিত্র কোরান মাথায় তুলে ধরে শপথ করে শারীরিক সম্পর্ক করে। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে এক হুজুর ডেকে ‘বিয়ে’ করে। কিন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে বললে নানা ধরণের প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তা এডিয়ে যায়। এভাবে করে সে তিন দফা আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বাধ্য করেছে। এখনও আমি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই মুহুর্তে সে আমাকে বৈবাহিক সম্পর্কের সামাজিক মর্যাদা না দিয়ে আত্মগোপন করেছে। ছেলেটি পিতার ইন্ধনে এখন প্রবাসে পাড়ি জমানোর পায়তারা করছে।”
কক্সবাজারের ইদগাঁও উপজেলার দক্ষিণ সাতজোলাকাটা গ্রামের যুবক শোয়াইবুল হকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন একই এলাকার ভুক্তভোগী নারী। অভিযুক্ত শোয়াইবুল হকের পিতা এচারুল হক প্রবাসী এবং ভুক্তভোগী নারীর পিতা মৃত আবুল শামা।
জানা যায়, ওই মেয়ের সাথে অভিযুক্ত যুবক শোয়াইবুল হকের পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। কিন্ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার দুই মাসের মাথায় মেয়েটির পিতা মারা যায়। এটাকে সুযোগ হিসেবে ধরে নিয়ে অভিযুক্ত যুবক শোয়াইবুল হক মেয়েটির সাথে প্রতারণামূলক যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলে। এবং এখন পর্যন্ত তিন দফা গর্ভের সন্তান নষ্ট করেছে। বর্তমানে মেয়েটি আবারও অন্তঃসত্ত্বা হলে তাকে সামাজিক মর্যাদা দিতে চাপ সৃষ্টি করে। তিনি আবার দুঃসম্পর্কের চাচীও হয় ।
এনিয়ে এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজ্জাক সহ গণ্যমান্য অনেকেই তাকে আপোস মীমাংসার জন্য অনুরোধ করে। কিন্ত অভিযুক্ত যুবক এসব কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে সমস্ত যোগাযোগ নাম্বার বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। সেই সাথে বিদেশে চলে যেতেও তোড়জোড় শুরু করেছে।
এঘটনায় মেয়েটি নিরুপায় হয়ে ইদগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শোয়াইবুল হককে একমাত্র আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু ধূর্ত প্রকৃতির এই ছেলে উচ্চ আদালত থেকে গোপনে জামিন নিয়ে ফেলে। আদালত তাকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছে বলে সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অভিযুক্ত শোয়াইবুল হক ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়ীত্বে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুহেনা বিশাদ। তিনি বলেন, ‘গোপনে এক নারীকে বিয়ে করে অন্তঃসত্ত্বা করে সামাজিক মার্যাদা না দেওয়ার অভিযোগটি শুনেছি দীর্ঘদিন আগে। বিষয়টি নিয়ে একবার রাজ্জাক মেম্বারসহ আমরা একটা শালিশী বৈঠকও করি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় যেকোনভাবে এটা সমাধান করার জন্য শোয়াইবুল হককে অনুরোধ করা হয়। তিনি সবসময় বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যাওয়ায় এটি আর সমাধান করা হয়নি।’
এলাকার সচেতন মহলের দেওয়া তথ্য মতে, শোয়াইবুল বিদেশ পাড়ি জমাতেই তথ্য গোপন করে জামিন নিয়েছে। অথচ তার উচিত ছিলো এই জামিন প্রাপ্তির প্রতি সম্মান রেখে মেয়েটিকে সামাজিক মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া। এবিষয়ে জানতে শোয়াইবুল হকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের কেউই এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হন নি।
এবিষয়ে ইদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান- ভিকটিমের বক্তব্য ও যাবতীয় তথ্য উপাত্ত যাচাই করে মামলা নিয়েছি। অন্যদিকে অভিযুক্ত যুবক ৬ মাসের জামিনে আছে। এখন মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
পাঠকের মতামত: